May 5, 2024, 7:58 pm

বর্ডার খুললে ২০-২৫ টাকায় আলু পাওয়া যাবে: ভোক্তার ডিজি

বর্ডার খুলে দিলে ২০-২৫ টাকার মধ্যে আলু পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।

সোমবার (২ অক্টোবর) জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে ভোক্তা অধিকার সচেতনতাবিষয়ক বিতর্ক প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভোক্তার ডিজি এ কথা জানান।

তবে এটি কোনো স্থায়ী সমাধান নয় জানিয়ে এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলে, এখন আমরা বর্ডার খুলে দিলে কৃষক বা আলু ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা ক্ষতির সম্মুখীন হবে। পরের বছর তারা আলু উৎপাদনে উৎসাহিত হবে না। অনেক কিছু বিবেচনা করতে হয়।

তিনি বলেন, এ মুহূর্তে দেশে চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটি দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতি। এ চ্যালেঞ্জ নিয়ে দেশের ১৭ কোটি মানুষ ভুগছে। এখানে যৌক্তিক কিছু কারণ রয়েছে। আমদানিকৃত পণ্যে ডলারের সমন্বয় করতে হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের মূল্য কখনো বাড়ছে, কখনো কমছে। যার প্রভাব সারাবিশ্বের মতো আমাদের দেশেও পড়ছে।

ভোক্তার ডিজি বলেন, আমাদের দেশে যেসব পণ্য উৎপাদিত হয় সেগুলোর উৎপাদন খরচ পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, অনেক ক্ষেত্রে আমাদের ব্যবসায়ী মহল, করপোরেট গ্রুপ বা যারা এটি নিয়ন্ত্রণ করে, তারা মাঝে মধ্যে একেকটা দ্রব্য নিয়ে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি করে। এর বিরুদ্ধে আমরা কাজ করছি।

আলুর নিয়ন্ত্রণহীন বাজার নিয়ে তিনি বলেন, গত ১৪ সেপ্টেম্বর বাণিজ্যমন্ত্রী আলুর দাম নির্ধারণ করেছেন। খুচরা পর্যায়ে ৩৫-৩৬ টাকা ও হিমাগার পর্যায়ে ২৭ টাকায় বিক্রি করতে। এটি কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে তাদের সুপারিশ অনুসারে নির্ধারণ করা হয়েছে। এ আলু দেড়-দুই মাস আগেও যখন হিমাগার থেকে ২৩-২৪ টাকায় বিক্রি হতো, তখনো তাদের লাভ থাকতো। এমন কোনো কারণ উদ্ভব হয়নি বা খরচ বাড়েনি যে, সেটি ৩৬-৪২ টাকা পর্যন্ত হিমাগার থেকে বিক্রি হবে। যার ফলে ভোক্তা পর্যায়ে আলুর দাম হাফ সেঞ্চুরি ছাড়িয়ে গেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৫৫ টাকাও বিক্রি হয়েছে। এগুলো অস্বাভাবিক আচরণ।

ভোক্তার ডিজি বলেন, অনেকের মতামত যে, আলুর দাম ৩৬ টাকা নির্ধারণের দুই সপ্তাহ পরও সরকারি দামে আলু বিক্রি হচ্ছে না। এটি সত্য কথা। আবার এটাও সত্য কথা, আমাদের প্রচেষ্টার ফলে আলুর দাম ৫০ টাকার ওপরে ৬০-৭০ টাকা হয়নি বরং অন্তত ১০ টাকা কমেছে। খুচরা পর্যায়ে এখন ৪০ টাকার মধ্যে আলু পাওয়া যাচ্ছে। কিছু কিছু জায়গায় আমরা ৩৬ টাকায় আলু বিক্রি নিশ্চিত করেছি।

তিনি বলেন, প্রতিদিন আমাদের ৪০-৪৫টি টিম বাজার নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। কিন্তু এ অভিযান কী যথেষ্ট? এ অভিযান কোনোভাবেই যথেষ্ট নয়। আমাদের লজেস্টিক সমস্যা আছে। ১৭টি জেলায় আমরা কোনো কর্মকর্তা দিতে পারিনি। জেলায় যেখানে আমরা ম্যান পাওয়ার দিতে পারিনি, সেখানে উপজেলা বা বড় বড় হাটগুলোতে আমাদের অভিযান চালানোর সুযোগ কম। তারপরও আমরা সমন্বিতভাবে কাজ করছি।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে কিছু দুর্বলতা আছে জানিয়ে ভোক্তার ডিজি বলেন, আইন যতোই শক্তিশালী হোক বা জনবল দশ গুণ বাড়ালেও কী তা দিয়ে আমি বাজার নিয়ন্ত্রণ বা ভোক্তার অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবো? এটি কখনোই সম্ভব নয়, যতোক্ষণ না আমাদের ব্যবসায়িক সমাজকে আমরা যুক্ত করতে না পারবো। পাশাপাশি ভোক্তারা যতোক্ষণ না নিজের অধিকার সম্পর্কে জেনে সেটি নিয়ে সোচ্চার না হবে, ততোক্ষণ আমরা পারবো না।

তিনি বলেন, একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে আমি বলতে পারি না আপনারা ডিম খাওয়া কমিয়ে দেবেন। এটি বলা ঠিক হবে না। আমরা ১৫ টাকার ডিম অভিযান চালিয়ে সাড়ে ১২ টাকা পর্যন্ত করতে পারলাম। কিন্তু আমরা সরকার নির্ধারিত ১২ টাকা অনেক চেষ্টা করেও করতে পারিনি। শেষ পর্যন্ত আমাদের ডিম আমদানির পথ খুলে দিতে হয়েছে। এতে দেশিয় পোল্ট্রি হুমকির মুখে পড়বে তা আমরা জানি। কিন্তু এখানে যে চক্রটি নিয়ন্ত্রণ করছে, সেটি ভাঙতে হলে এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :